
যেভাবে ফিট ও স্লিম থাকেন বিদ্যা বালান
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিদ্যা বালান তাঁর অভিনয়ের গুণে বহুদিন ধরেই দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি যেন এক ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। ‘পরিণীতা’, ‘কাহানি’, ‘দ্য ডার্টি পিকচার’, কিংবা ‘তুমহারি সুলু’—প্রতিটি ছবিতেই তিনি প্রমাণ করেছেন, নারীর চরিত্র কেবল গ্ল্যামার নয়, তা হতে পারে গভীর, শক্তিশালী ও বাস্তবের প্রতিফলন। বিদ্যা বালানের অভিনয়ে এক ধরনের প্রাঞ্জলতা ও আত্মবিশ্বাস লক্ষ্য করা যায়, যা তাঁকে সমসাময়িক অভিনেত্রীদের চেয়ে আলাদা করে তোলে।তবে কেবল অভিনয় নয়, নিজের শরীর ও চেহারা নিয়েও বিদ্যা বালান বরাবরই আলোচনায় ছিলেন। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিনি ছিলেন বেশ রোগা, পরে ধীরে ধীরে তাঁর ওজন বেড়ে যায়। কিন্তু কখনোই তিনি নিজের ভারি চেহারা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেননি। সাম্প্রতিক সময়ে আবারও তাঁকে দেখা গেছে আগের তুলনায় অনেক ঝরঝরে রূপে। ‘ভুলভুলাইয়া ৩’-এ তাঁর নতুন অবতার দেখে দর্শকরা বিস্মিত হয়েছেন। রোগা হওয়ার পর বিদ্যা এখন নানা সাজে ও পোশাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চলেছেন।সম্প্রতি এক পডকাস্টে বিদ্যা জানিয়েছেন, তাঁর এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে একটি বিশেষ ডায়েট—অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটারি ডায়েট। তিনি বলেন, বছরের পর বছর শরীরচর্চা করেও যা সম্ভব হয়নি, তা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। এই ডায়েটের মাধ্যমে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে তাঁর ওজন বৃদ্ধির আসল কারণ ছিল শরীরের প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন। প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরে চর্বি জমতে থাকে, যতই ব্যায়াম করা হোক না কেন।অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটারি ডায়েট আসলে এমন এক খাদ্যতালিকা, যেখানে প্রদাহ বাড়ায় এমন খাবার সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়। যেমন—প্রক্রিয়াজাত খাবার, ময়দা, চিনি ইত্যাদি। এর বদলে রাখা হয় প্রদাহ কমায় এমন খাবার—তাজা ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম, মাছ, দই, ওটস, ব্রাউন রাইস ইত্যাদি। এমনকি হলুদ, আদা, রসুনের মতো রান্নাঘরের সাধারণ মসলাগুলিও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই শরীর স্বাভাবিকভাবে সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ থাকে।আজকের বিদ্যা বালান কেবল এক সফল অভিনেত্রী নন, বরং একজন আত্মবিশ্বাসী নারী, যিনি নিজের শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সৎভাবে লড়েছেন। তাঁর গল্পটি প্রমাণ করে যে সৌন্দর্য কেবল গঠন বা ওজনে নয়, বরং নিজের প্রতি ভালোবাসা ও যত্নেই নিহিত। বিদ্যার এই যাত্রা অনুপ্রেরণার, যা শেখায়—নিজেকে বদলানো মানেই কেবল বাহ্যিক রূপান্তর নয়, বরং অন্তরের এক নতুন আলোয় আলোকিত হওয়া।