
এটিএন বাংলা, ওয়াসা ভবন, ২য় তলা, ৯৮ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ
ফোনঃ +88-02-55011931
এ সম্পর্কিত আরও খবর
ভালোবাসা কি শুধু মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ? না,যেখানে মানুষকে ভালোবাসলেও বিনিময়ে ভালোবাসা মেলেনা সেখানে মানুষের ভালোবাসার দাম রেখেছে একটি সাদা বক। আর বনের এই পাখিরসঙ্গে মধুর সম্পর্ক গড়ে ভালোবাসার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এক ব্যবসায়ী।
পটুয়াখালীতে এক দোকানদার আর এক সাদাবকের মধ্যে গড়ে উঠেছে এমন এক বন্ধুত্ব, যাদেখতে দূর-দুরান্ত থেকে ভীড় জমাচ্ছেন অনেকেই। ঘটনাটি পটুয়াখালীরবাউফল উপজেলার নুরাইনপুর বাজারে। স্থানীয় দোকানদার হেমায়েত উদ্দিনের দোকানের সামনে প্রায় প্রতিদিনই দেখা যেত এক সাদা বককে।আর এই বন্ধুত্বের শুরুটাহয়েছিল চার মাস আগে এক ঝড়ের রাতে। সেখানে ‘বকের বাড়ির পাশে পড়ে যায় ছোট্ট এক বকের ছানা।ঠিক তখনই সেটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এক গুইসাপ। প্রাণপণেছানাটিকে রক্ষা করেন হেমায়েত। সেদিন
হেমায়েতজানিয়েছেন, তিনি যত্ন করে পাখিটির ডানায় ওষুধ লাগিয়ে দিতেন। ভাত-মাছখাওয়াতেন। আর এমন যত্নে বকটি ভরসা করে ফেলে তার প্রতি। তিনি বলেন, এখন আমিদোকানে না থাকলে বকটাকেমন অস্থির হয়ে পড়ে। দিন যায়, সময় পেরোয়, কিন্তু বকের আচরণ বদলায় না। দোকানের সামনের বাঁশে বসে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কখনওদোকানে ঢুকে শান্তভাবে তাকিয়ে থাকে মালিকের দিকে। আশ্চর্যের বিষয়, ও কখনো কিছুনষ্ট করত না, বরং দোকানের নিয়ম-শৃঙ্খলাও যেন বুঝত!
স্থানীয়রাবলেন,বাজারে এমন দৃশ্য আগে কখনও দেখেননি। মানুষ আসে, ছবি তোলে এমনকি শিশু-কিশোররাও স্কুল শেষে ছুটে আসে হেমায়েতের দোকানে। আর বকটি এখন যেন পুরো এলাকার ‘তারকা’ বনে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে তাদের ছবি ও ভিডিও।
তবেএই গল্পের এক আবেগঘন সমাপ্তিওরয়েছে। স্থানীয় বন বিভাগ বন্যপ্রাণীসংরক্ষণ আইনে বকটিকে অবশেষে ‘বকের বাড়ি’ এলাকায় অবমুক্ত করে। যদিও বকটিও যেন এমন মায়া কাটিয়ে চলে যেতে চাইছিল না। তবে যেতে তো হবেই। আর বকটির উড়ে যাওয়ারমুহূর্তে হেমায়েতের চোখ ভিজে ওঠে। তিনি বলেন ও যেন আমার সন্তান মতোই ছিল। ওকে ছাড়া এখন দোকানটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে। তবু প্রতিদিন বিকেলে তিনি তাকিয়ে থাকেন আকাশের দিকে। হয়তো একদিন আবার ফিরে আসবে সেই বন্ধু, যাকে ভালোবাসা দিয়ে বাঁচিয়েছিলেন তিনি। /টিএ