এটিএন বাংলা, ওয়াসা ভবন, ২য় তলা, ৯৮ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ
ফোনঃ +88-02-55011931
এ সম্পর্কিত আরও খবর
শুধু ফল খেয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন গোটা কয়েক বছর। এমনই এক খাদ্যাভ্যাসে নিজেকে অভ্যস্ত করে তুলেছিলেন পোল্যান্ডের তরুণী করোলিনা ক্রিজ্যাক। বয়স মাত্র ২৭ হলেও, বছরের পর বছর ফলের ওপর নির্ভর করে শরীরকে এতটাই দুর্বল করে ফেলেছিলেন যে শেষ পর্যন্ত প্রাণটাই হারাতে হয় তাকে। বালির একটি হোটেল কক্ষে নিঃশব্দেই শেষ হয় তার জীবন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে করোলিনা উঠেছিলেন বালির সুমবেরকিমা হিল রিসোর্টে। আগেই একটি সুইমিং পুলসহ ভিলা চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হোটেলে পৌঁছানোর পর কর্মীরা ভয় পেয়ে যান, কারণ তার শরীরের অবস্থা ছিল রীতিমতো করুণ—চোখ গর্তে ঢুকে গেছে, গলার হাড় বেরিয়ে আছে, শরীর কেবল চামড়া ও হাড়ের স্তূপ। হোটেল কর্মীরা বলেছিলেন, করোলিনার শরীর
দেখে মনে হচ্ছিল তিনি জীবনস্রোতের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছেন।এক পর্যায়ে করোলিনা এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েন যে নিজে চলাফেরা করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। এক রাতে তিনি এক কর্মীর সাহায্য ছাড়া নিজের রুমেই ফিরতে পারেননি। শরীরে দেখা দিয়েছিল পুষ্টিহীনতার প্রকট লক্ষণ—নখ হলুদ, দাঁত পচন ধরা, ত্বক বিবর্ণ। হোটেল কর্মীরা তাকে বারবার চিকিৎসা নিতে অনুরোধ করেন, কিন্তু করোলিনা প্রত্যাখ্যান করেন। তার বিশ্বাস ছিল, এই ফল-নির্ভর ডায়েটই শরীরকে "শুদ্ধ ও সুস্থ" রাখে।তিন দিন পর করোলিনার এক বন্ধু তার কোনো খোঁজ না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানান। তখন রুমের দরজা খুলে দেখা যায়, করোলিনা বিছানায় নিথর হয়ে পড়ে আছেন। ডাক্তার এসে নিশ্চিত করেন—অপুষ্টি ও অনাহারের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এসময় তার ওজন ছিল মাত্র ২২ কেজি। দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টির কারণে তিনি অস্টিওপরোসিস ও অ্যালবুমিনের ঘাটতিতে ভুগছিলেন, যা শরীরকে আরও বেশি দুর্বল করে তোলে।করোলিনার বন্ধুরা জানান, কৈশোর থেকেই নিজের শারীরিক গঠন নিয়ে তিনি ছিলোন আত্মবিশ্বাসহীন। একসময় অ্যানোরেক্সিয়ায় ভুগেছিলেন তিনি। পরে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে গিয়ে যোগব্যায়াম ও ভেগানিজমে আগ্রহী হন। ধীরে ধীরে এই পথই তাকে ঠেলে দেয় ‘ফ্রুটারিয়ানিজম’-এর দিকে—যেখানে খাদ্যতালিকায় থাকে প্রায় শুধু কাঁচা ফল।করোলিনার মৃত্যু আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—সব সময় ভাইরাল ট্রেন্ড মানেই যে স্বাস্থ্যকর, তা নয়। কখনও কখনও সেই "সুস্থতার পথ"ই হতে পারে মৃত্যুর ফাঁদ।/টিএ