
এটিএন বাংলা ডেস্ক: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে যুদ্ধপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দুইজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান।
রায় কার্যকরের আগে নিয়ম অনুযায়ী সাকা ও মুজাহিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। মৌলভী এসে ইসলামী রীতি অনুযায়ী আসামিদের তওবা পড়ান।
এরপর ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জামায়াতের এই সেক্রেটারি জেনারেলকে।
এরআগে, শনিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদের স্বজনরা দেখা করে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।
তার আগে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরের সঙ্গে দেখা করে আসেন তার স্বজনরা। মুজাহিদের স্বজনরা বেরিয়ে আসার পর চারটি অ্যাম্বুলেন্স ঢুকে কারাগারের ভেতরে।
দিনভর নানা আলোচনা চললেও রাত সাড়ে ৮টায় দেখা করতে স্বজনদের কারা কর্তৃপক্ষের আহ্বান এবং কারাগারের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার জোর ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে, রাতেই ফাঁসি কার্যকর হচ্ছে।
শনিবার রাত ৯টার দিকে রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেওয়ায় রাতেই ফাসি কার্যকর করার বিষয়টি চলে আসে। রাত ১২টার মধ্যই কারাগারে শেষ দেখা করেছেন সাকা ও মুজাহিদের স্বজনরা।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে। অপরদিকে মুজাহিদের লাশ ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
রায় কার্যকর করতে পূর্বেই কারাগারে ছয়জন জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। এরা হলেন, শাহজাহান, রাজু, আবুল, মাসুদ, ইকবাল ও মুক্তার। এছাড়া ফাসি কার্যকরের সময় কারাগারে ছিলেন দুই ম্যাজিস্ট্রেট, আইজি প্রিজন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও সিভিল সার্জন।
শনিবার বিকেলে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রাণভিক্ষার আবেদনের নথি বঙ্গভবনে পৌঁছায়।
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মুজাহিদ। আবেদনপত্রটি রাষ্ট্রপতির দফতরে পাঠানোর পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
এর আগে, বিকেলে সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর পক্ষে রায় পুনর্বিবেচনার জন্য তার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরীর আবেদন গ্রহণ না করে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রেরণের করার পরামর্শ দেয় বঙ্গভবন কর্তৃপক্ষ।
বিকেলে সাকার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ইংরেজিতে লেখা দুই পৃষ্ঠার একটি আবেদনপত্র নিয়ে বঙ্গভবনে যান। আবেদনে সালাউদ্দিন কাদেরের বিচার প্রক্রিয়াকে মিসট্রায়াল হিসেবে বিবেচনা করার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ জানানো হয়।
পরে সালাউদ্দীন কাদেরের ছেলে সাংবাদিকদের জানান, তার বাবার প্রাণভিক্ষার আবেদন সম্পর্কে নিশ্চিত নন তারা। এসময় নিজের বাবাকে নির্দোষ বলেও দাবি করেন তিনি।
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মুজাহিদ। আবেদনপত্রটি রাষ্ট্রপতির দফতরে পাঠানোর পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
এর আগে ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর ফাঁসিতে ঝোলানো হয় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে।
এরপর ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল ফাঁসিতে ঝোলানো হয় জামায়াতের অপর সেক্রেটারি জেনারেল যুদ্ধাপরাধী মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে।