বাধ্যতামূলক ২ হাজার টাকা করের বিধান বাতিল

বাধ্যতামূলক ২ হাজার টাকা করের বিধান বাতিল
রিটার্ন দাখিলে ন্যূনতম ২ হাজার টাকা করের বিধান বাতিল করে জাতীয় সংসদে অর্থবিলের সংশোধনী পাশ করা হয়েছে। ১ জুন জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় আয়কর রিটার্ন জমায় ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ। এবার বাজেট ঘোষণার সময় রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা আছে এমন করদাতার জন্য করযোগ্য আয় না থাকলেও ন্যূনতম ২ হাজার টাকা কর দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।

অর্থবিল পাশের সময় গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল শুধু এ সংক্রান্ত সংশোধনী গ্রহণ করেন। বাকি  করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা হলেও অর্থবিলের তপশিল-২-এর অনুচ্ছেদ ক-এর ঝ-প্যারায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে এ রূপ করদাতার মোট আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম না করিলে আয়ের পরিমাণ নির্বিশেষে ন্যূনতম করের পরিমাণ ২ হাজার টাকা হইবে।’

গতকাল অর্থবিল ২০২৩-এর সংশোধী প্রস্তাবের তালিকায় ময়মনসিংহ-৮ আসনের সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এবং সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বিলের উল্লেখিত প্যারাটি বর্জন করার প্রস্তাব করেন। অর্থমন্ত্রী এই সংশোধনীর প্রস্তাব গ্রহণ করেন। মোট ৮২টি সংশোধনীর প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপন করে সংসদ সদস্যরা। এর মধ্যে শুধু ২ হাজার টাকা কর বাতিলের প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবটি গতকাল রাতে অর্থমন্ত্রী বিলটি সংসদে উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে এ বিল পাশ করা হয়। এর আগে বিলটির সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি করা হয়।    বাজেটের ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সমাপনী বক্তব্যের পর অর্থবিল-২০২৩ সংসদে পাশের জন্য উত্থাপন করা হয়। অর্থমন্ত্রী গত ১ জুন আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছিল। আজ সোমবার বাজেট পাশের সূচি রয়েছে।

গতকাল অর্থমন্ত্রী তার সমাপনী বক্তব্যে উল্লেখ্য করেন, আমাদের এবারের বাজেটের মূল দর্শন, ২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ব্রেইনচাইল্ড সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ। তাই আমরা বাজেটের প্রতিটি খাতে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনায়, আমরা দেশের জনগণকে মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন ভাতার হার বৃদ্ধি করেছি। আমরা দেশের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষকে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আনতে পেরেছি। প্রায় ১ কোটি পরিবারকে বিনা মূল্যে বা স্বল্প মূল্যে খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের ‘উন্নয়ন অর্থনীতির কারিগর’, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিনি আমাদের বাংলাদেশকে মাত্র ১৪ বছরে ৬০তম অবস্থান থেকে ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত করে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের ২০টি বৃহত্ অর্থনীতির দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে একটি সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও জ্ঞানভিত্তিক ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা করা। অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, জননেত্রী শেখ হাসিনার অসীম সাহস ও দূরদর্শী নেতৃত্বে সব চ্যালেঞ্জকে সুযোগে পরিণত করে, আপনাদের সকলের সহযোগিতায়, দেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।