নেপালকে হারিয়ে স্বপ্নের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

নেপালকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের সেমিফা্ইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। নেপালের দেওয়া ২১২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌছে যায় বাংলাদেশের যুবারা।

২০০৬ এ শ্রীলঙ্কায় যে কাজটি করতে পারেনি মুশফিক-সাকিব-তামিমরা; সেটাই করে দেখালো ১১তম আসরে এসে মিরাজ-শান্ত-পিনাক ঘোষরা। বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো নিয়ে গেলেন অর্নূর্ধ্ব – ১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে।

ইতিহাস রচনায় কোয়ার্টর ফাইনালের শুরুটা বেশ ভালো করেছিলো বাংলাদেশের যুবারা। ৬ বলের ব্যবধানে নেপালের দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিয়ে শুরুতেই আঘাত হেনেছিল

১৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর নেপাল প্রথম প্রতিরোধ করে তৃতীয় উইকেটে ৪৪ রানের জুটিতে। ক্রমেই দুশ্চিন্তা বাড়াতে থাকা জুটিটা বাংলাদেশ ভেঙেছে দুর্দান্ত এক রান আউটে।

কিন্তু বাংলাদেশের স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। চতুর্থ উইকেটে নেপালের যুবারা দারুণ খেলছিলেন। যাকে বলে ‘ক্লেভার ক্রিকেট’। বাউন্ডারি আসছিল, সঙ্গে সিঙ্গেল নিয়ে রানের চাকা সচল রাখা। এক সময় ওভারে ছয়েরও ওপরে রান পাচ্ছিল নেপাল। ভাগ্যও যেন পাশে ছিল তাদের। স্পিনে কাজ হচ্ছে না দেখে অধিনায়ক মিরাজ আবার আক্রমণে নিয়ে আসেন পেসার সাইফউদ্দিনকে। আর তাতেই বাজিমাত।

দারুণ বোলিংকে বেশ উজ্জীবিত করে ফিল্ডিংটাও যদি দুর্দান্ত হয়। বাংলাদেশের যুবারা সেটাই করছেন। পুরো ম্যাচে নেপাল ৯ উইকেট হারালেও কাদের চারটি ছিলো রান আউট। তারপরও নেপালের স্কোর ২১১ হয় রাজ রিজালের ৭২ রানের সুবাদে।

এবারের আসরে বাংলাদেশের সামনে সবচেয়ে বড় রানের টার্গেট। আর যার অতিক্রমের শুরুতেই বাংলাদেশ ধাক্কাখায় ৫ রান করা সাইফ হাসানের উইকেট হারিয়ে।

এরপর নেপালের বোলারদের দেখেশুনে খেলতে থাকে বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান পিনাক ঘোষ ও সাইফ হোসেন। তবে দলীয় ১৭ রানে সাইফের উইকেট হারায় টাইগাররা। দলীয় ৬৩ রানে আরেক ওপেনার পিনাক ঘোষ আউট হন। করেন ৩২ রান। ব্যক্তিগত ৮ রানে নাজমুল হাসান শান্ত আউট হলে চাপে পড়ে জুনিয়র টাইগাররা।

এর পর ২২ ওভার এক বলে দলীয় ৯৮ রানে ৩৮ করে জয়রাজ ফিরলে শঙ্কা জাগে বাংলাদেশ শিবিরে। কিন্তু এর পর জাকির হোসেন এবং মেহেদী মিরাজ সব শঙ্কা উড়িয়ে দেন। দুজনেই তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। গড়ে তোলেন ১১৭রানের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপ।

শেষ পর্যন্ত আর কোন বিপদ না ঘটিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন দুজন। জাকির ৭৫ এবং মিরাজ ৫৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।

ব্যাট হাতে ৫৫ রান এবং বল হাতে এক উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মেহেদী হাসাব মিরাজ।

শুধু যুব বিশ্বকাপ বা ক্রিকেট নয়, যেকোন ধরনের খেলার বিশ্ব আসরে এই প্রথমবারের মত সেমিফাইনালে উঠল বাংলাদেশ।