নিজামীর ফাঁসির রায় বহাল, রিভিউ খারিজ

এটিএন বাংলা ডেস্ক: মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামীর পুর্নবিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৪ বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের ফলে মুক্তিযুদ্ধের সময় বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ তিনটি ঘটনায় নিজামীর ফাঁসির রায় বহাল থাকল। এখন তিনি কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। এরপর তার দণ্ড কাযর্কর হবে।

পাবনার বাউশগাড়িতে প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষ হত্যা, ধুলাউড়া গ্রামে হত্যা ও বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত থাকার ঘটনায় জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগ রায় দেয় গত ৬ জানুয়ারি। দু’টি ঘটনায় তাকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আপিল বিভাগের রায় পুর্নবিবেচনার আবেদন করেন আল বদর নেতা নিজামী। মঙ্গলবার শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রায় দেয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল।

আপিল বিভাগ তার রায়ে নিজামী সম্পর্কে বলেছিলেন, আল বদর বাহিনীর নেতা হিসেবে এই বাহিনীর ওপর নিজামীর কর্তৃত্ব ও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ছিল। তাদের বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ সমস্ত বর্বরতাকে তিনি মেনে নিয়েছিলেন। এই ধরনের নিষ্ঠুর ও বর্বর অপরাধে কেউ সামান্যতম অংশীদার হলেও তার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। বলা যায়, সেই নীতি থেকে সরে আসেনি আদালত।

রিভিউ খারিজ হওয়ার ৫ দিন পর কামারুজ্জামানের, ৩ দিন পর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের এবং রিভিউ খারিজ হওয়ার রাতে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। এ রায়ের পর নিজামীর সামনে এখন সুযোগ রয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার।

রিভিউর রায় প্রকাশ হওয়ার পর দণ্ড কার্যকরের অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর এখন কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইবার উপর নির্ভর করে। আর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাইলে কারা কর্তৃপক্ষ ফাঁসির কার্যক্রম শুরু করবে।

বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডসহ হত্যা-গণহত্যা ও ধর্ষণের প্রমাণিত ৮টি মানবতাবিরোধী অপরাধে নিজামীকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ৪টিতে ফাঁসি ও ৪টিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয় তকে।

পরে গত ৬ মার্চ আপিলের রায়ে ৩ টিতে ফাঁসি ও ২ টিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখে সুপ্রিমকোর্ট। সেই আদেশের পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আসামিপক্ষের আবেদনের শুনানি হয় গত মঙ্গলবার।

শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৪ বিচারপতির বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার সময় নির্ধারণ করেন।