
জরুরি বিদেশ যাত্রা, চিকিৎসা বা স্কুলে ভর্তির মতো ১৮টি রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা পেতে জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন প্রত্যেক নাগরিকের। এমন গুরুত্বপূর্ণ সনদটি গত ২মাস ধরে পাচ্ছেন না দক্ষিন ঢাকার বাসিন্দারা। রাজস্ব ভাগাভাগির জেরে প্রায় ২ মাস ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি এলাকায় বন্ধ জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম। কবে চালু হবে তারও নিশ্চয়তা নেই। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন হাজারো মানুষ। নিবন্ধনের টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হওয়া বেআইনি বলছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রতিদিনই সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসগুলোতে এসে ফেরত যাচ্ছেন সেবা প্রত্যাশীরা। জরুরী সব কাজ আটকে আছে অনেকের।
এ নিয়ে বংশালের বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান জানান, “সন্তানের পাসপোর্ট করবো জন্ম নিবন্ধন দরকার। আজকে তিনদিন আসলাম বলে, বন্ধ। কবে ঠিক হবে জানি না।” এসময় দক্ষিন ঢাকার আরেক বাসিন্দা জানান, “প্রায় ১ মাসের উপর হলো নিবন্ধনের আবেদন নিচ্ছে না। এটা তে অনেক জরুরী একটা কাগজ। এটা ছাড়া কোন কাজই তো করতে পারছি না। সরকারের প্রতি অনুরোধ দ্রুত চালু করা হোক”।
এ জটিলতা তৈরী হয়েছে জন্ম নিবন্ধনের ফি ভাগাভাগি নিয়ে। সিটি করপোরেশন নিজ জনবল আর সরঞ্জাম দিয়ে এ সেবা দিচ্ছে কয়েকযুগ ধরে কিন্তু এর রাজস্ব জমা হয় সরকারী কোষাগাড়ে। যা আইন পরীপন্থি বলছে তারা। এসব নিয়ে নিয়ে আপত্তি জানায় দক্ষিন সিটি করপোরেশন। এ খাতে ব্যয় করেও আয়ের ভাগ না পাওয়ায় সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয় সেবাটি। এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা অনেক আগে থেকে জন্ম নিবন্ধন দিচ্ছি। এটি দেয়ার দায়িত্ব আমাদের কিন্তু এ সেবা দিতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে আমাদের অনেক ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে অথচ নিবন্ধন ফি সরাসরি নিচ্ছে অন্য সংস্থা। তাই আমরা আবেদন জানিয়েছি যেন আমাদেরকে ফি কালেকশনের অনুমতি দেয়া হয়। “ তিনি আরো জানান, “জনবল, কাগজ, কলম এ সব খাতে তো আমরা ব্যয় করছি তাহলে আমরা কেন টাকা পাবো না? সুতরাং আইন অনুযায়ী এ দায়িত্ব আমাদেরকেই দিতে হবে। আমাদের ব্যয়ের পরে বাকি টাকা আমরা সরকারী কোষাগাড়ে দিব”।
এ সমস্যা সমাধানে গেল সপ্তাহে সচিবালয়ে বৈঠক হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। স্থানীয় সরকার বিভাগও চায় দ্রুত আবার চালু হোক জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম। এ নিয়ে এটিএন বাংলাকে এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানান, “আমরা সব কথা শুনেছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে টাকা সরকারী কোষাগাড়েই যাবে তবে এর একটা অংশ সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। সুতরাং আশা করি দ্রুত সব সমাধান হয়ে যাবে। জনভোগান্তির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি সবার জন্য ভোগান্তির তাই আমরা গুরুত্বের সাথেই এর সমাধানে কাজ করছি।” পুরো ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত বলেও জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী।
দুই সংস্থার এমন মতের অমিলে ভোগান্তির শিকার মানুষেরা এ সমস্যার সমাধান চান। তবে, কবে নাগাদ দক্ষিণ সিটিতে পূণরায় জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম চালু হবে তা নিশ্চিত নয় কেউ।