
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করে জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র পুনর্ব্যক্ত করেছে যে গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই এবং তারা বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয়।
ওয়াশিংটনে বুধবার (২৬ জুলাই) নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যকে সমর্থন করি।’
বেদান্ত প্যাটেল বলেন যে, তারা সবসময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে।
প্যাটেল আরও বলেন, ‘এটি আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আমরা বিশ্বাস করি যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন একটি অভিন্ন অগ্রাধিকার এবং প্রধানমন্ত্রীসহ (শেখ হাসিনা) অনেক বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তা নিজেরাই বলেছেন যে এটি তাদের লক্ষ্য।’
বুধবার ঢাকায় নিযুক্ত ১৩ রাষ্ট্রদূতকে তাদের ‘অকূটনৈতিক আচরণের’ জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
এ প্রসঙ্গে বুধবার (২৬ জুলাই) বিকেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আমাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। উনাদের যৌথ বিবৃতিটি ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে যথাসময়ের অনেক আগেই তড়িঘড়ি করে অপরিণতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি আমাদের আজকের আলোচনার পর তারা সেটি নিশ্চয়ই উপলব্ধি করবেন এবং ভবিষ্যতে এমন অকূটনৈতিক আচরণ থেকে বিরত থাকবেন।’
তিনি বলেন যে কূটনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশনের কথা মনে করিয়ে গঠনমূলক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
শাহরিয়ার আলম বলেন, কূটনীতিকদের সতর্ক করা হয়েছে যে সরকারকে পাশ কাটিয়ে ‘বস্তুনিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতা বর্জিত আচরণ’কেবলই পারস্পরিক আস্থার সংকট তৈরি করবে।
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে একজন প্রার্থী লাঞ্ছিত হওয়ার পর সম্প্রতি যৌথ বিবৃতি জারি করা ১৩টি বিদেশি মিশনের রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারদের তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে হিরো আলম নামে পরিচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলমের ওপর হামলার পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বিদেশি মিশনগুলো বলেছে, ‘আমরা ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই।’
যৌথ বিবৃতিতে কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের দূতাবাস/হাইকমিশন সই করেছেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, তারা কূটনীতিকদের জানিয়ে দিয়েছেন যে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে সারা দিনের শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনকে মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।
ঘটনাটি জানাজানি হলে নির্বাচন কমিশন ও সরকার তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১৯ জুলাই কূটনীতিকদের বিবৃতি দেওয়ার অনেক আগেই কিন্তু দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও এই কূটনীতিকরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন, যা অযাচিত ও অপ্রয়োজনীয়।’